আজকে একটি সচেতনতামূলক বিষয় আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি,
বিষয়টি হল
ব্রেস্ট ক্যান্সার বা স্তন ক্যান্সার
বিষয়টি অনেক জরুরী প্রত্যেকটা নারীর জন্য, কারণ পুরো বিশ্বে যে পরিমাণ নারী ক্যান্সারে মারা যায় তার মধ্যে প্রথম তালিকায় রয়েছে স্তন বা ব্রেস্ট ক্যান্সার। যদিও বিগত বছরে জরায়ু ক্যান্সার এই স্থানটি নিয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে জরায়ু ক্যান্সার কে পিছনে ফেলে স্তন ক্যান্সার, ক্যানসারের তালিকায় প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে।
এখন আমরা জানবো স্তন ক্যান্সার কি বা কাকে বলে????
স্তন বা ব্রেস্ট এর কিছু কোষ যখন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে তখন স্তন ক্যান্সার দেখা যায়। তখনই অনিয়মিত ও অতিরিক্ত কোষগুলো বিভাজনের মাধ্যমে টিউমার বা পিন্ডে পরিণত হয় এবং রক্তনালীর লসিকা ও অন্যান্য মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এ ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা ক্যান্সার রোগের আতঙ্কের কারন।
এমন অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সাহায্য নিয়ে রোগীকে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলা বা দীর্ঘ জীবনের নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না।
আশার বিষয় হচ্ছে স্তন ক্যান্সার যদি আমরা শুরুতে বা প্রাথমিক স্তরে শনাক্ত করতে পারি, তবে তার সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে প্রায় শতভাগ নিরাময় করা যায়।
কেন হচ্ছে ক্যান্সারঃ
কেন হচ্ছে ক্যান্সার এবং ক্যান্সারের কারণ গুলো কি ??
কারণগুলোকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করতে পারি।
- একটা হলো পরিবর্তনযোগ্য
- আরেকটা হল অপরিবর্তনযোগ্য
পরিবর্তনযোগ্য কারণগুলো আমরা একটু পরে আলোচনা করব।
অপরিবর্তনযোগ্য কারণগুলো হলোঃ
>জেনেটিক বা বংশগত
>হরমোন
এসব কারণে হয়ে থাকে যা আমরা চাইলেও পরিবর্তন করতে পারিনা।
পরিবর্তনযোগ্য কারন সমূহঃ
এই ধরনের কারন তো অনেকগুলাই রয়েছে। তার মধ্য থেকে যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো এখন আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি…..।।
প্রথমতঃ
অনেক বেশি বয়স পর্যন্ত বিয়ে না করা এবং 30 বছর বয়সের পর নারীদের প্রথম সন্তানের মা হওয়া কিংবা সন্তান না নেওয়া, মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়।
দ্বিতীয়তঃ
সন্তানকে নিয়মিত বুকের দুধ না খাওয়ানোর অভ্যাসের কারণে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।
তৃতীয়তঃ
যারা অতিরিক্ত ফ্যাট যুক্ত খাবার খান এবং খাদ্যতালিকায় একেবারে শাকসবজি রাখেন না তাদের ক্ষেত্রে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
চতুর্থতঃ
যে কারণটি সেটি হল লেভেল না দেখে দুরগন্ধনাশক (ডিওডোরেন্ট) স্প্রে ব্যবহার করে। কেন না আজকাল কর্মজীবী নারী হোক বা শিক্ষার্থী হোক সারাদিন বাইরে থাকে আর সেই সাথে ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করেন। প্রায় সবাই কিন্তু এ জাতীয় স্প্রে কেনার সময় খেয়াল রাখেনা কি কি উপাদান আছে।
এতে এলোমোনিয়াম উপাদান থাকলে তা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
যেহেতু আপনি প্রতিদিন ব্যবহার করেন তাই কোন কোম্পানির পণ্য ব্যবহার করবেন তা আগে একজন স্কিন বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে জেনে নিন।।।
স্তন ক্যান্সার এর অপরিবর্তনযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে জেনেটিক কারণে মানুষের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার জন্য দায়ী (৫%-১০%)।
- বংশগত কারণে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন অনেকে। মা, খালা, বোন বা মেয়ের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকাংশে।
- মহিলাদের মাসিক শুরু এবং শেষের দিকের সময়ে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নির্ভর করে।
- যাদের 12 বছর বয়সে মাসিক শুরু হয় এবং 50 বছরের বয়সের পর মাসিক বন্ধ হয় তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।
- লিঙ্গ ভেদে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে একজন নারী পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকেন।
- বিশেষ করে 50 বছরে পা দিলো স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায় যেটা মোটেও পরিবর্তন যোগ্য নয়।
বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ আর এতই বিশাল যে আমরা এই অল্প কথার মধ্যে শেষ করতে পারবো না।
যেগুলা বললাম এই ছাড়াও আরো শত শত অনেকগুলো কারণ রয়েছে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার জন্য।
তাই বন্ধুদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ থাকবে যেসব কারণগুলো ব্রেস্ট ক্যান্সার এর জন্য দায়ী এসব কারণগুলো পরিহার করুন।
ধন্যবাদ