গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়? – মিথ বনাম বাস্তবতা

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় - মিথ বনাম বাস্তবতা

গর্ভাবস্থায় অনেক প্রত্যাশা থাকে, তার মধ্যে একটি হল সুন্দর, ফর্সা রঙের সন্তান। এই আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য অনেকেই বিভিন্ন খাবার খাওয়ার পরামর্শ অনুসরণ করেন। কিন্তু এই ধারণাগুলো কতটা বাস্তব? গর্ভাবস্থায় কি খেলে সত্যিই বাচ্চা ফর্সা হয়? আসুন, মিথ ও বাস্তবতার জগতে একটু ঘুরে আসি।

মিথ:

  • কিছু নির্দিষ্ট খাবার বাচ্চার রঙ ফর্সা করে: অনেকেই বিশ্বাস করেন, দুধ, কেশর, বাদাম, খেজুর, ও বরফী খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়।
  • চর্মের রঙ পরিবর্তন করা সম্ভব: অনেকে মনে করেন, গর্ভাবস্থায় বিশেষ পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিলে বাচ্চার রঙ ফর্সা করা যায়।

বাস্তবতা:

  • জিনগত প্রভাব: ত্বকের রঙ মূলত জিন দ্বারা নির্ধারিত হয়। পিতামাতার ত্বকের রঙের সাথে মিল রেখে শিশুর ত্বকের রঙও তৈরি হয়।
  • পুষ্টির ভূমিকা: ভারসাম্যপূর্ণ পুষ্টিকর খাবার গর্ভস্থ শিশুর সার্বিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য। তবে, কোন নির্দিষ্ট খাবার ত্বকের রঙ পরিবর্তন করতে পারে না।
  • চর্মের যত্ন: ত্বকের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা শিশুর জন্মগত ত্বকের রঙ পরিবর্তন করতে পারে না।

গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থা নারীর জীবনের একটি বিশেষ সময়। এই সময় মায়ের শরীরে নানা রকম পরিবর্তন আসে এবং সন্তানের সুস্থ বৃদ্ধির জন্য পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ অপরিহার্য। খেজুর, তার মিষ্টি স্বাদ ও প্রচুর পুষ্টিগুণের জন্য, গর্ভবতী মায়েদের জন্য একটি আদর্শ খাবার।

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার 5 টি উপকারিতা:

  1. প্রচুর শক্তির উৎস: খেজুরে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকে যা দ্রুত শক্তি প্রদান করে। গর্ভাবস্থায়, শারীরিক পরিশ্রম বৃদ্ধি পায় এবং ক্লান্তি অনুভূত হয়। খেজুর খেলে এই ক্লান্তি দূর হয় এবং শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ হয়।
  2. হজমশক্তি উন্নত করে: খেজুরে ফাইবার থাকে যা হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েরই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়। খেজুর খাওয়ার ফলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  1. রক্তশূন্যতা দূর করে: খেজুরে আয়রন থাকে যা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং অনেক মায়েরই আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। খেজুর খাওয়ার ফলে এই ঘাটতি পূরণ হয়।
  2. প্রসব সহজ করে: খেজুরে প্রসব বেদনা কমাতে সাহায্য করে এমন উপাদান থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত খেজুর খেলে প্রসবের সময় ব্যথা কম হয় এবং প্রসব সহজ হয়।
  3. শিশুর বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি করে: খেজুরে মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে এমন পুষ্টি উপাদান থাকে। নিয়মিত খেজুর খেলে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ভালো হয় এবং শিশুর জ্ঞানাত্মক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

খেজুর খাওয়ার পরিমাণ:

গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন 2-3 টি খেজুর খাওয়া যেতে পারে। তবে, ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেজুর খাওয়া উচিত।

গর্ভাবস্থায় সুষম খাদ্য গ্রহণ করা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে, শিশুর ত্বকের রঙ পরিবর্তন করার জন্য কোন বিশেষ খাবার বা পদ্ধতি নেই। মনে রাখবেন, প্রতিটি শিশুই সুন্দর, ত্বকের রঙ নির্বিশেষে।