মেছতা ত্বকের একটি সাধারণ সমস্যা যা মুখের রঙে বৈষম্য তৈরি করে। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন হরমোন পরিবর্তন, সূর্যের আলো, ঔষধ, গর্ভধারণ এবং জীবনধারার পরিবর্তন।
মেছতা কী?
মেছতা, যা মেলাজমা নামেও পরিচিত, ত্বকের একটি সাধারণ সমস্যা। এটি মুখের, বিশেষ করে গাল, নাক, কপাল, এবং ঠোঁটের উপরে বাদামী বা কালো দাগ তৈরি করে।
মেছতার কারণ:
- হরমোনের পরিবর্তন: গর্ভধারণ, স্তন্যদান, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, এবং থাইরয়েড সমস্যার কারণে হরমোনের পরিবর্তনে মেছতা হতে পারে।
- সূর্যের আলো: সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি ত্বকের মেলানিন উৎপাদন বৃদ্ধি করে, যা মেছতার কারণ হতে পারে।
- জিন: মেছতার পারিবারিক ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- ঔষধ: কিছু ঔষধ, যেমন বিরক্তি-নিরোধক এবং কেমোথেরাপির ঔষধ মেছতার কারণ হতে পারে।
মেছতার লক্ষণ:
- মুখের, বিশেষ করে গাল, নাক, কপাল, এবং ঠোঁটের উপরে বাদামী বা কালো দাগ।
- দাগগুলো সমান আকারের এবং আকৃতির হতে পারে।
- দাগগুলো দীর্ঘ সময় ধরে থাকতে পারে।
মেছতা দূর করার জন্য অনেক ঘরোয়া উপায় আছে যা ব্যবহার করা যেতে পারে।
মেছতা দূর করার ৫ টি ঘরোয়া উপায়:
১. হলুদ:
হলুদ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন যা ত্বককে উজ্জ্বল করতে এবং মেছতা দূর করতে সাহায্য করে। হলুদের গুঁড়ো দুধের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান এবং ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
২. লেবু:
লেবুতে থাকা সাইট্রিক এসিড ত্বকের মৃত কোষ অপসারণ করে এবং মেছতা দূর করতে সাহায্য করে। লেবুর রস পানিতে মিশিয়ে তুলার বল ভিজিয়ে মুখে লাগান এবং ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
৩. টমেটো:
টমেটোতে থাকা লাইকোপিন ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করতে এবং মেছতা দূর করতে সাহায্য করে। টমেটোর রস মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
৪. মুলতানি মাটি:
মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং মেছতা দূর করতে সাহায্য করে। মুলতানি মাটি, গোলাপ জল, এবং লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান এবং ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
৫. অ্যালোভেরা:
অ্যালোভেরা ত্বককে শান্ত করে এবং মেছতা দূর করতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরার জেল মুখে লাগিয়ে রাতভর রেখে পরের দিন সকালে ধুয়ে ফেলুন।
কাদের ব্যবহার করা উচিত নয়
- গর্ভবতী হলে এই উপায়গুলো ব্যবহার করা উচিত নয়।
- কোন গুরুতর ত্বকের সমস্যা থাকলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
- এলার্জির সম্ভাবনা থাকলে যেকোনো নতুন উপাদান ব্যবহার করার আগে ত্বকের ছোট্ট অংশে পরীক্ষা করে দেখুন।
- ধৈর্য ধরুন, কারণ ঘরোয়া উপায়গুলোর ফলাফল দেখতে সময় লাগতে পারে।
এই উপায়গুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে মেছতা ধীরে ধীরে দূর হবে। তবে, মনে রাখবেন যে, প্রত্যেকের ত্বক ভিন্ন। একজনের জন্য কার্যকর উপায় অন্যজনের জন্য কার্যকর নাও হতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে মেছতা না গেলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।