আমাদের ত্বককে ঠিক রাখার জন্য রূপচর্চা করাটা জরুরী । আর রূপচর্চার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো ফেসিয়াল ।
আপনিও নিশ্চয়ই সবার মত ফেসিয়ালের জাদুকরী ফলাফলের স্বপ্ন দেখেন?
তবে ঠিক কোন ফেসিয়ালটি ত্বকে সবচেয়ে ভালো কাজ করবে , সবচেয়ে ভালো ফলাফল দিবে , সারাক্ষণ মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে । আসলেই এত রকম ফেসিয়ালের নাম শুনে বিভ্রান্ত হবারই কথা।
চিন্তা করবেন না! এই লেখাটি আপনাকে সঠিক পথে চালিত করবে। এখানে আপনি জানবেন আপনার ত্বকের প্রয়োজন বুঝে
কোন ফেসিয়ালটি সবচেয়ে ভালো ফলাফল দেবে।
ত্বকের ধরণঃ
আপনার ত্বকে কোন ফেসিয়ালটি সবচেয়ে ভালো কাজ করবে সেটা নির্ভর করবে আপনার ত্বক কোন ধরনের সেটির উপর । ত্বকের ধরন অনুযায়ী মুখের মধ্যে ফেসিয়াল অ্যাপ্লাই করতে হবে ।
আমাদের ত্বকের ধরণ হয়
১। তৈলাক্ত ত্বক
২। শুষ্ক ত্বক
৩। মিশ্র ত্বক ও
৪। সংবেদনশীল ত্বক ( সেনসেটিভ ত্বক ) ।
ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেসিয়াল নির্বাচনঃ
১। তৈলাক্ত ত্বকের ফেসিয়ালঃ
তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নেওয়া বেশ কঠিন হতে পারে। অতিরিক্ত তেল, ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, ওয়াইটহেডস, এবং মুখের ত্বকে চকচকে ভাব – এইসব সমস্যা তৈলাক্ত ত্বকের মানুষদের জন্য খুবই সাধারণ। এ সকল সমস্যা দূর করতে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য যে ধরনের ফেসিয়াল গুলো গুরুত্বপূর্ণ।
ক্লেনজিং ফেসিয়াল: এই ফেসিয়াল মুখের ত্বক থেকে ময়লা, ধুলো, এবং অতিরিক্ত তেল অপসারণ করবে।
ডিপ ক্লেনজিং ফেসিয়াল: এই ফেসিয়াল মুখের ত্বকের গভীর থেকে ময়লা, ধুলো, এবং তেল অপসারণ করবে।
অয়েল-কন্ট্রোল ফেসিয়াল: এই ফেসিয়াল ত্বকের তেলের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে এবং ত্বককে ম্যাট করে।
এন্টি-ব্রণ ফেসিয়াল: এই ফেসিয়াল ব্রণ প্রতিরোধ করে এবং ব্রণের দাগ দূর করে।
২। শুষ্ক ত্বকের ফেসিয়ালঃ
শুষ্ক ত্বকের মানুষদের জন্য ফেসিয়াল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ । তবে ত্বকের ধরণ অনুযায়ী সঠিক ফেসিয়াল বেছে নেওয়া উচিত ।
শুষ্ক ত্বকে এপ্লাই করতে পারবেন এমন ফেসিয়ালগুলো হলঃ
হাইড্রেটিং ফেসিয়াল: এই ফেসিয়াল ত্বকে আর্দ্রতা সরবরাহ করে এবং ত্বককে নরম করে তুলবে ।
ময়েশ্চারাইজিং ফেসিয়াল: এই ফেসিয়াল ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লক করে এবং ত্বককে শুষ্ক হতে বাধা দেয়।
অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল: এই ফেসিয়াল মুখের বলিরেখা এবং ত্বক কুচকে যাওয়া কমাতে সাহায্য করে।
৩। মিশ্র ত্বকের ফেসিয়ালঃ
মিশ্র ত্বক হল এক ধরণের ত্বক যা কিছু অংশে তৈলাক্ত এবং কিছু অংশে শুষ্ক। সাধারণত টি-জোন (কপাল, নাক এবং থুতনির অংশ) তৈলাক্ত থাকে এবং গালের অংশ শুষ্ক থাকে। এই ধরণের ত্বকের যত্ন নেওয়া বেশ সচেতন থাকতে হবে কারণ তেল নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈলাক্ত অংশে মনোযোগ দেওয়া হলে শুষ্ক অংশ আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
তাই এই ত্বকের ভারসাম্য বজায় রাখবে এমন ফেসিয়াল নির্বাচন করতে হবে ।
ক্ল্যাসিক ফেসিয়াল: এটি একটি মৌলিক ফেসিয়াল যা ত্বক পরিষ্কার, স্ক্রাব, টোন এবং ময়েশ্চারাইজ করে।
ডিপ ক্লিনজিং ফেসিয়াল: এটি ত্বকের গভীর থেকে ময়লা এবং তেল অপসারণ করতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-এজিং ফেসিয়াল: এটি বলিরেখা এবং বয়সের দাগ কমাতে সাহায্য করে।
হাইড্রেটিং ফেসিয়াল: এটি ত্বকে আর্দ্রতা যোগ করতে এবং শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে।
৪। সংবেদনশীল ত্বকের ফেসিয়ালঃ
আপনার ত্বক কি সহজেই জ্বালাপোড়া করে, লাল হয়ে যায় বা ফুসকুড়ি ওঠে? যদি তাই হয়, তাহলে আপনার ত্বক সম্ভবত সংবেদনশীল। সংবেদনশীল ত্বকের যত্ন নেওয়া কঠিন হতে পারে, কারণ এটি যেকোন সময় যে কোন কিছুর প্রতি সংবেদনশীল হতে পারে।
হাইড্রেটিং ফেসিয়াল: এই ফেসিয়াল ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে এবং শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে।
অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ফেসিয়াল: এই ফেসিয়াল ত্বকের অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে।
ফলের ফেসিয়াল: এই ফেসিয়াল সংবেদনশীল অর্থাৎ সেনসিটিভ ত্বকে খুব বেশি আরাম দিবেন ।
উপরে যে ফেসিয়াল গুলোর কথা আমি বর্ণনা করলাম আপনারা আপনাদের ত্বকের ধরন অনুযায়ী যে কোন একটি ফেসিয়াল নির্বাচন করতে পারেন এখান থেকে যে কোন একটি ফেসিয়াল নির্বাচন করে মুখে এপ্লাই করলে আপনারা খুব ভাল ফলাফল পাবেন ।