তীব্র গরমের সময় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে হিট স্ট্রোক নামক জরুরী অবস্থা দেখা দিতে পারে।
হিট স্ট্রোক মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য অঙ্গের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ
- শরীরের তাপমাত্রা 40°C (104°F) এর বেশি
- তীব্র মাথাব্যথা
- বমি বমি ভাব
- দ্রুত এবং দুর্বল পালস
- শ্বাসকষ্ট
- চামড়া লাল, শুষ্ক এবং গরম
- বিভ্রান্তি
- চেতনা হারানো
- পেশীতে টান
- খিঁচুনি
- আচরণগত পরিবর্তন
- জ্বর
- ঠোঁট এবং জিহ্বা শুষ্ক
- অতিরিক্ত ঘাম
হিট স্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসা
১. ঠান্ডা পরিবেশে সরিয়ে নিন:
- ব্যক্তিকে ঠান্ডা, ছায়াযুক্ত জায়গায় সরিয়ে নিন।
- যদি সম্ভব হয়, তাহলে এয়ার কন্ডিশনযুক্ত ঘরে নিয়ে যান।
২. পোশাক খুলে ফেলুন:
- ব্যক্তির অতিরিক্ত পোশাক খুলে ফেলুন।
- শুধুমাত্র হালকা, সুতির পোশাক রেখে দিন।
৩. ঠান্ডা জল দিয়ে শরীর ঠান্ডা করুন:
- ব্যক্তির কপাল, ঘাড় এবং বুকে ঠান্ডা জলের তোয়ালে দিয়ে সেঁক দিন।
- যদি সম্ভব হয়, তাহলে ব্যক্তিকে ঠান্ডা গোসলে ফেলুন।
৪. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করান:
- ব্যক্তিকে ঠান্ডা পানি বা ইলেক্ট্রোলাইটযুক্ত পানীয় পান করান।
- ধীরে ধীরে পানি পান করুন, অতিরিক্ত পানি খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
৫. চিকিৎসা সহায়তা নিন:
- তৎক্ষণই চিকিৎসা সহায়তা নিন।
- এম্বুলেন্সে ফোন করুন বা ব্যক্তিকে নিকটতম হাসপাতালে নিয়ে যান।
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধের ৫ টি টিপস:
১. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন:
- দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
- গরমের দিনে আরও বেশি পানি পান করুন।
- পানি ছাড়াও ফলের রস, শরবত এবং ইলেক্ট্রোলাইটযুক্ত পানীয়ও পান করতে পারেন।
২. হালকা পোশাক পরুন:
- সূতির তৈরি হালকা, পাতলা পোশাক পরুন।
- গাঢ় রঙের পোশাক এড়িয়ে চলুন কারণ এগুলি তাপ শোষণ করে।
- টুপি এবং ছাতা ব্যবহার করে সূর্যের আলো থেকে রক্ষা করুন।
৩. সূর্য থেকে সাবধান থাকুন:
- দিনের সবচেয়ে গরম সময় (সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টা) বাইরে বেশিক্ষণ থাকবেন না।
- যদি বাইরে বের হতে হয়, তাহলে ছায়ায় থাকুন।
- সানস্ক্রিন ব্যবহার করে ত্বককে রক্ষা করুন।
৪. নিয়মিত বিরতি নিন:
- গরমের দিনে কাজের সময় নিয়মিত বিরতি নিন।
- বিরতির সময় ঠান্ডা জায়গায় থাকুন।
- ঠান্ডা পানি পান করুন।
৫. স্বাস্থ্যকর খাবার খান:
- হালকা খাবার খান।
- তেলযুক্ত এবং মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
- ফল এবং শাকসবজি বেশি খান।
নোট
- হিট স্ট্রোক একটি জরুরী অবস্থা।
- দ্রুত চিকিৎসা না করা হলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।
- হিট স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য সতর্ক থাকুন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।