প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার উপায়

multani-mitti-for-skin

ফর্সা ত্বক চাওয়ার মধ্যে কোনো লজ্জা নেই। কিন্তু কঠোর রাসায়নিক ও দামি ট্রিটমেন্টের আগে কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, ত্বকের স্বাস্থ্যই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, রঙের চেয়েও বেশি। আর দ্বিতীয়ত, প্রাকৃতিক উপায়েও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানো সম্ভব । 

আজ আমি আপনাদের সাথে প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার এমন কিছু উপায় শেয়ার করব যেগুলো ব্যবহার করলে আপনাদের ত্বক প্রাকৃতিক উপায়ে ফর্সা হবে । 

১। প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ফর্সা করতে পানিঃ

পানি, এই সহজ উপাদানই আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পারে। পানি ত্বকের কোষগুলোকে হাইড্রেটেড রাখে, ফলে ত্বক নরম, মসৃণ ও উজ্জ্বল দেখায় । পানি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে। পানি রক্ত ​​​​চলাচল বৃদ্ধি করে ত্বকে অক্সিজেন সরবরাহ করে। পানি ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ করে ব্রণ প্রতিরোধ করে। 

শীতকালে-পানি-পান-করার-উপকারিতা

প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ফর্সা করতে পানি পানের নিয়ম:

  • প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
  • দিন শুরু করুন এক গ্লাস পানি দিয়ে।
  • খাওয়ার আগে ও পরে এক গ্লাস পানি পান করুন।
  • ব্যায়ামের আগে, সময় ও পরে পানি পান করুন।
ওজন কমানোর ওয়েট লস ড্রিংক (2)
  • গরমের দিনে পানি পানের পরিমাণ বাড়ান।
  • পানি পানের জন্য রিমাইন্ডার ব্যবহার করুন।

২। প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ফর্সা করতে স্বাস্থ্যকর ডায়েটঃ

স্বাস্থ্যকর ডায়েট আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পারে। ডায়েট ত্বকের কোষগুলোকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। ডায়েট অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে ত্বকের ক্ষতি রোধ করে। ডায়েট ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে।

এক-মাসে-৫-কেজি-ওজন-কমানোর-ডায়েট-প্লান

ডায়েট শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে।  ডায়েটের কারণে ত্বক এত সার্ভিস পাওয়ার ফলে ত্বক আপনা আপনি ভেতর থেকে উজ্জ্বল ও ফর্সা হয় ।    

ত্বক ফর্সা করতে ডায়েটে যে সকল খাবার অবশ্যই রাখবেনঃ

  • ফল: কমলা, আঙ্গুর, পেঁপে, বেরি, আপেল ইত্যাদি।
দ্রুত-উপায়ে-ওজন-কমানোর-উপায়
  • শাকসবজি: পালং শাক, ব্রকলি, গাজর, টমেটো, শসা ইত্যাদি।
  • সম্পূর্ণ শস্য: ওটমিল, ব্রাউন রাইস, quinoa ইত্যাদি।
  • বাদাম ও বীজ: কাজুবাদাম, চিনাবাদাম, তিসি, সূর্যমুখী বীজ ইত্যাদি।
  • মাছ: স্যামন, টুনা, রুই ইত্যাদি।
  • ডিম: ডিমের সাদা অংশে প্রচুর প্রোটিন থাকে যা ত্বকের জন্য উপকারী।

৩। প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ফর্সা করতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষাঃ

শীতকালে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য সানস্ক্রিন
  • সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন: SPF 30 বা তার বেশি সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন এবং প্রতি দুই ঘন্টা পর পর তা লাগান।
  • টুপি ও রোদচশমা ব্যবহার করুন: বাইরে বের হওয়ার সময় টুপি ও রোদচশমা ব্যবহার করুন।
  • সূর্যের আলো এড়িয়ে চলুন: সূর্যের আলো সবচেয়ে তীব্র থাকে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এই সময় বাইরে বের হওয়া এড়িয়ে চলুন।
  • পোশাক: পুরো হাতা পোশাক এবং দীর্ঘ প্যান্ট ব্যবহার করুন।
  • শিশুদের সুরক্ষা: শিশুদের ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাই তাদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। 

৪। প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ফর্সা করতে পর্যাপ্ত ঘুমঃ 

পর্যাপ্ত ঘুম আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পারে। তাই ত্বকের ফর্সা করতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো অত্যন্ত জরুরী । 

ওজন-অনুযায়ী-ডায়েট-চার্ট

কীভাবে ঘুম ত্বককে ফর্সা করে:

  • ঘুমের সময় ত্বকের কোষগুলো পুনর্গঠিত হয় এবং ক্ষতি মেরামত হয়।
  • ঘুমের সময় ত্বকে রক্ত ​​​​চলাচল বৃদ্ধি পায়, যার ফলে ত্বকে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ বৃদ্ধি পায়।
  • ঘুমের সময় ত্বক থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়।
  • মানসিক চাপ ত্বকের উজ্জ্বলতা কমিয়ে দেয়। পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

কত ঘুম প্রয়োজন:

ওজন কমানোর উপায়
  • প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতি রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন।
  • শিশুদের জন্য প্রতি রাতে ১০-১২ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন।
  • বয়স্কদের জন্য প্রতি রাতে ৭-৯ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন।

৫। প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ফর্সা করতে প্রাকৃতিক উপাদান 

আপনি কি সুন্দর, উজ্জ্বল এবং ফর্সা ত্বকের স্বপ্ন দেখেন?

প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ত্বক ফর্সা করার নিরাপদ এবং কার্যকর উপায় আছে।এই লেখায় আমরা কিছু সহজলভ্য প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করব যা আপনাকে ফর্সা এবং উজ্জ্বল ত্বক পেতে সাহায্য করবে।

চালের গুড়াঃ

চালের গুঁড়ার ব্যবহার

চালের গুড়ায় প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বককে ফর্সা করে এবং উজ্জ্বল করে।

ব্যবহার:

  • চালের গুড়া ও গোলাপ জল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন। 

মধুঃ

মধুর অসাধারণ কিছু উপকারিতা

মধু ত্বকের প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং উজ্জ্বল করে।

ব্যবহার:

  • মধু মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • সপ্তাহে ৩-৪ বার ব্যবহার করুন।

দইঃ

দই ত্বকের মৃত কোষ অপসারণ করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে।

ত্বক ফর্সা করার উপায়

ব্যবহার:

  • দই মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।

টমেটো:

টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপিন থাকে, যা ত্বকের ক্ষতি রোধ করে এবং ফর্সা করতে সাহায্য করে।

মুখে টমেটো লাগানোর উপকারিতা (3)

ব্যবহার:

  • একটি টমেটো মিহি করে ব্লেন্ড করে নিন।
  • মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।

হলুদঃ

হলুদ ত্বকের জন্য একটি অসাধারণ উপাদান। এটি ত্বকের কালচে দাগ দূর করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে।

হলুদেরর উপকারিতা (2)

ব্যবহার:

  • হলুদের গুঁড়ো দুধের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
  • মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।

নোটঃ

১। এই উপাদানগুলো ব্যবহারের আগে এই উপাদানগুলোতে অ্যালার্জি পরীক্ষা করে নিন।

২। এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ব্যবহারে ধৈর্য ধরতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারে আপনি ফর্সা এবং উজ্জ্বল ত্বক পাবেন।

মুখের-কালো-দাগ-ও-গর্ত-দূর-করার-উপায়

উপরে আপনি আপনাদেরকে যে বিষয়গুলো শেয়ার করলাম এগুলো মেনে চললে আপনারা প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরে বসে ত্বকের ফর্সা করতে পারবেন ।