মুখে মধু ব্যবহারের উপকারিতা

মুখে মধু ব্যবহারের উপকারিতা

মধু এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখা , বলিরেখা কমিয়ে ত্বক টানটান করা ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে । তবে কোন ধরনের প্রক্রিয়াজাত ছাড়া একেবারে খাঁটি ও বিশুদ্ধ মধু যদি আপনি মুখে ব্যবহার করতে পারেন তাহলেই উপকার পাবেন ।  

মধুতে বিদ্যমান উপাদান 

মধুতে অনেক উপাদান রয়েছে যা আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে । মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে যা ত্বককে শুধু উজ্জ্বলই করে না, সেই সঙ্গে ত্বকের কালো দাগ দূর করে। মধুতে প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া বিরোধী উপাদান থাকে যা ত্বককে ব্যাকটেরিয়া হাত থেকে রক্ষা করে এবং অ্যাকনি পিম্পলস দূর করতেও সাহায্য করে।   

মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানের পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট  আছে যা ত্বকের বলিরেখা কমিয়ে ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে। 

চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ,

মুখে মধু ব্যবহারে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়

ত্বকের নমনীয়তায় 

খাঁটি মধু চেনার উপায়

আমরা অনেকেই জানি না যে মধু এক ধরনের প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।  ধুলোবালি বা অযত্নের কারণে যদি আমাদের ত্বক অনমনীয় হয়ে যায় । তাহলে আমরা মধু ব্যবহার করে খুব সহজেই ত্বককে মশ্চারাইজ ও নমনীয় করতে পারবো ।এর জন্য নিয়মিত এক টেবিল চা চামচ পরিমাণ মধু 15 থেকে 20 মিনিটের জন্য মুখে লাগিয়ে রাখুন এরপর নরমাল পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন ।আপনি নিজেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন । আপনার ত্বক নরম ও কোমল হয়ে যাবে ।

মধু লোমকূপে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে

মুখের লোমকূপে মাঝে মাঝে ময়লা জমে যায় ।এই ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার না করা গেলে ত্বক অনেক কালো দেখায় ।এই সমস্যা থেকে বাঁচতে মুখের লোমকূপে জমে থাকা ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে । লোমকূপে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে সবথেকে বেশি ভালো কাজ করে মধু ।

খাঁটি মধু চেনার উপায়

কারণ মধুতে এক ধরনের এনজাইম থাকে যা লোমকূপের গভীরে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে ।

 লোমকূপে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে একটি বাটিতে এক টেবিল চা চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে এক টেবিল চামচ মধু ভালো করে মেশিয়ে নিন এরপর মিশ্রণটি পুরো মুখে হালকা ভাবে হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মালিশ করতে থাকুন চার থেকে পাঁচ মিনিট মালিশ করার পর হালকা কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন এই ব্যক্তি ব্যবহারে আপনার লোমকূপ পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং ত্বক হবে উজ্জ্বল ।

তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে মধু 

আমাদের একেকজনের ত্বক একেক রকম । কিন্তু যাদের তৈলাক্ত ত্বক তারা খুব বেশি চিন্তায় থাকে । তাদের ত্বকে আদ্রতা কম হয় । ত্বকের আদ্রতা ফিরিয়ে ত্বককে ঝলমল ও সুন্দর করে তুলতে পারে মধু  । আপনি চাইলে মধুর সাথে  তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারেন।  তৈলাক্ত ত্বকের জন্য একটি বাটিতে দুই চামচ মধু নিন। এরপর এক কাপ তুলসীপাতা নিন । পাতা গুলোকে ব্লেন্ড করে সেখান থেকে রস বের করুন । রস গুলো ভালো করে ছেঁকে নিন। রস ছেঁকে নিয়ে পাতার বাকি অংশ ফেলে দিতে পারেন । এরপর মধু ও তুলসী পাতা একত্র করে ভালো করে মিশিয়ে নিন । ব্যাস তৈরি হয়ে গেল আপনার প্যাক।

খাঁটি মধু চেনার উপায়

এই প্যাকটি মুখে লাগানোর আগে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন । একটি পরিষ্কার গামছা দিয়ে মুখ মুছে নিন ।এরপর পুরো মুখে প্যাকটি লাগিয়ে নিন । ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার হালকা গরম পানিতে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন । সপ্তাহে দুইদিন অন্তত এই প্যাকটি ব্যবহার করুন ।

ব্রণ দূর করতে মধু

ত্বকে ব্রণ হলে তা আমাদেরকে অনেক কষ্ট দেয় । মধু ব্যবহার করে খুব সহজেই ত্বকের ব্রণ দূর করা সম্ভব । কারণ মধুতে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে । অ্যান্টি ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের জ্বালাপোড়া কম করে ।এতে করে ব্রণ থাকলে তা চলে যায় ।

ত্বকে ব্রণ হলে কি করব

মুখের যে জায়গায় ব্রণ আছে সে জায়গায় মধু লাগিয়ে 15 থেকে 20 মিনিট অপেক্ষা করুন এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন । দিনে দুই বার  এই কাজটি করতে পারেন।

সাবধানতা 

যে মধুর রং যত গাঢ় তাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ তত বেশি। তাই অপ্রক্রিয়াজাত খাঁটি মধু ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। নানান রকমের মধু যেমন- ফুল ও ভৌগলিক ভিন্নিতার জন্য হরেক রকমের মধু পাওয়া যায়। তাই সবসময় প্রাকৃতিক মধু ব্যাবহার করা ভালো।